স্টাফ রিপোর্টার:
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পেয়ার আহমেদ নামে এক যুবককে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে বুকের হাড় ভেঙ্গে দেয়ার অভিযোগে নিষিদ্ধ সংগঠন উপজেলা ছাত্রলীগের অন্যতম সদস্য ও আলোচিত হ্যামলেট বাহিনীর সদস্য সাবিককে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আদালতের মাধ্যমে তাকে কুমিল্লা জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। সে পৌর সদরের চৌগুরী গ্রামের খিল বাড়ির পেয়ার আহম্মেদের ছেলে। একই সঙ্গে নিষিদ্ধ সংগঠন নাঙ্গলকোট পৌরসভা ছাত্রলীগের সভাপতি ও উপজেলা ব্যাপী হ্যামলেট বাহিনীর প্রধান ওবায়দুল হকের সেকেন্ডে ইন কমান্ড ছিলেন তিনি। ৫ আগস্টের আগে ওবায়দুল হকের নেতৃত্বে মৌকরা ও রায়কোট দক্ষিণ ইউপির কালেম বেতাগাঁও গ্রামে অগ্নি সংযোগ দেয়া সহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়াতেন এ হ্যামলেট বাহিনী। আ.লীগের আমলে এই হ্যামলেট বাহিনীর নাম শুনলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়তে পুরো উপজেলার মানুষ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চৌগুরী গ্রামের খিল বাড়ির রফিকুল ইসলামের ছেলে পেয়ার আহম্মেদের সঙ্গে একই বাড়ির রিপন ও সুমন গংদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় পেয়ার আহম্মেদ ছোট বোন মাহমুদা আক্তার তার বাবার বাড়িতে আসলে বাড়ির জায়গা নিয়ে রিপন ও সুমন কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রিপন, সুমন, সাবিক তার পিতা পেয়ার আহম্মেদ ও দেলোয়ার দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে মাহমুদাকে পিটাতে থাকে। তাৎক্ষণিক পেয়ার আহম্মেদ বাঁধা দিতে গেলে তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে বুকের হাড় ভেঙ্গে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয় লোকজন এসে আহতদের উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে পেয়ার আহম্মেদের অবস্থা আশঙ্কা জনক হলে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এরআগেও বেশ কয়েক বার পেয়ার আহম্মেদকে মারধর করার অভিযোগও রয়েছে সাকিব গংদের বিরুদ্ধে। রাতেই মাহমুদ আক্তার নাঙ্গলকোট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সাকিবকে আটক করে।
এ বিষয়ে মাহমুদ আক্তার বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় বাবার বাড়িতে গেলে বাড়ির জায়গা নিয়ে রিপন ও সুমন আমাকে বার বার মারতে আসে। এক পর্যায়ে রিপন, সুমন, সাকিব ও তার পিতা পেয়ার আহম্মেদসহ ৮-১০ জন আমাকে লাঠি দিয়ে পিটাতে থাকে। এ সময় আমার ভাই এসে বাঁধা দিলে তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে বুকের হাড় ভেঙ্গে দেয়। বর্তমানে সে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি৷ পুলিশ একজনকে আটক করেছে। যে কিনা বিগত সরকারের আমলে হ্যামলেট বাহিনীর অন্যতম সদস্য। এটা এলাকার সবাই জানে। তিনি এ ঘটনার সুস্থ বিচারের দাবি জানান।
এ ঘটনার অভিযুক্ত রিপন ও সুমনের মুঠো ফোনে একাধিক বার কল দিও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে গোপন সূত্রে জানা যায়, পৌরসভা বিএনপির এক সিনিয়র নেতা ওই হ্যামলেট বাহিনীর সদস্য সাকিবকে ছাড়ানোর জন্য থানায় তদবির করেন। এক পর্যায়ে তিনি ৩-৪ শত লোক নিয়ে এসে থানা ঘেরাও করার হুমকিও দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট থানার ওসি (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ সাকিবকে আটক করেছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।