প্রিন্ট এর তারিখ : ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ||
প্রকাশের তারিখ : ০৭ অক্টোবর ২০২৫
বিএনপি কুমিল্লা জেলা কমিটিতে ডুকতে মরিয়া দুদুকের আসামী আওয়ামীপন্থী জাফর সাদেকা
নিজস্ব প্রতিবেদক ||
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আওয়ামী লীগপন্থী সিবিএ নেতা মো. জাফর সাদিক এবার কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ পাওয়ার জন্য মরিয়া বলে নাঙ্গলকোটের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন। জাফর সাদেক নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত আহবায়ক কমিটির সদস্যও ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নাঙ্গলকোট উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নের মকিমপুর গ্রামে। গত ২ অক্টোবর ২০২৫ নাঙ্গলকোটের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ও ৩ অক্টোবর শুক্রবার কুমিল্লা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জাফরকে বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে দেখা গেছে। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাকারিয়া তাহের সুমন ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম এ প্রসংগে বলেন, অন্য দল থেকে আসা কোন ব্যক্তির দলের পদ পদবিতে থাকার সুযোগ নেই। বিতর্কিত ও সমালোচিত ব্যক্তিদের তো প্রশ্নই আসে না। জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে দলের ত্যাগী, পরিশ্রম ও মাঠের কর্মীদের দিয়ে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয় রাজউকের ১২ জন কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনে। এতে মো. আবু জাফর সাদিকের নাম ১ নম্বরে আছে। এতে জাফর সাদেকের ঠিকানা লেখা হয় রাজধানীর শান্তিনগরের ৩৩ মেহমান টাওয়ার। গ্রামের বাড়ি উল্লেখ করা হয় নাঙ্গলকোটের মকিমপুর গ্রাম। তিনি ওই গ্রামের মো. নুর আহমেদ ও জাহেদা আক্তারের ছেলে। ২০০৬ সালে তিনি রাজউকের কর্মচারী পদে যোগ দেন। এরপর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি সিবিএ রাজনীতি করেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুরু করেন। তিনি রাজউক কল্যাণ ট্রাস্টের সভাপতি ছিলেন। ওই সময়ে তিনি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন। শ্রমিক লীগের অফিসে তিনি বসতেন ও যেতেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর তিনি শ্রমিক দলে ভিড়ে যান। রাজধানীর পর এবার নাঙ্গলকোট ও কুমিল্লা বিএনপিতে প্রবেশ করতে চান জাফর সাদেক। এজন্য লবিস্ট কাজ করছেন তার জন্য। কিন্তু জাফরের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। চলতি বছরের ৬ এপ্রিল অনুমোদিত নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটিতে তার নাম সদস্য হিসেবে তিন নম্বরে ছিল। অভিযোগ রয়েছে, ওই সময়ে তাকে সদস্য সচিব করতে মরিয়া ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক নজির আহমেদ ভুঁইয়া। কিন্তু তার আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকার কারণে সদস্য করা হয়। তাও সদস্য পদে আব্দুল গফুর ভূঁইয়া ও মোবাশ্বের আলম ভুঁইয়ার পরপরই জাফর সাদিকের নাম। উল্লখ্য,১৯৮৫ সাল থেকে ছাত্রদল হয়ে যুবদল, বিএনপির রাজনীতি করছেন নাঙ্গলকোট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন নয়ন। তিনি বলেন,‘ নাঙ্গলকোটের কোন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে জাফরের দেখা মেলেনি। উনি ঢাকায় আওয়ামী লীগপন্থী সিবিএ নেতা। এখন শুনতেছি, কারা নাকি জাফরকে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক সব যাচাই করেই সিদ্ধান্ত নেবেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে মো. জাফর সাদিক বলেন,‘ আমি ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলাম। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সম্পাদক ছিলাম। ২০০৬ সালে রাজউকে কর্মচারী পদে যোগদান করি। এরপর আমি আওয়ামী লীগের আমলে সিবিএ করি। সিবিএ করার কারণে বঙ্গবন্ধুর মাজারে টঙ্গীপাড়া গেছি। আওয়ামীলীগের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠান করতে হয়েছে। ওই আমলেও আমার বিরুদ্ধে চারটি মামলা হয়। দুদক মামলা করে। জাফর সাদেক বলেন, আমি নাঙ্গলকোটে কোন রাজনীতি করিনি। এবার উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ছিলাম। এখন জেলা কমিটিতে যাওয়ার চেষ্টা করছি। তবে এটা ভাগ্যেও ব্যাপার। চাইলেও যে পদ পাব তা কিন্তু নয়। আমি দল করতে চাই। এমপি উপজেলা চেয়ারম্যান হতে চাই না। সাংবাদিক নঈম নিজামের সাথে সংখ্যতা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন নঈম নিজাম আমার নানুর আপন চাচাতো ভাই। ঢাকাস্থ নংগলকোট উপজেলা সমিতির সভাপতি ছিলেন তিনি। আমি ছিলাম সাংগাঠনিক সম্পাদক। তাই নাঙ্গলকোটবাসী হিসেবে উনাকে ফুল দিয়েছি। এটা দোষের কিছু না। আগামীতে নাঙ্গলকোটে যিনি বিএনপির মনোনয়ন পান, আমি তার পক্ষে কাজ করব। তিনি আরও বলেন, দুদক আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন নিয়ে। এগুলো নিয়ে তদন্ত চলছে।
প্রধান সম্পাদক: জামাল উদ্দিন স্বপন, প্রধান সম্পাদক কর্তৃক শতরূপা প্রিন্টার্স, সালাম কমপ্লেক্স দ্বিতীয় তলা, নিউ মার্কেট কুমিল্লা থেকে মুদ্রিত ৮২, বাইপাস সড়ক মধ্য লাকসাম, লাকসাম, কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ৪৪, চেয়ারম্যান বাড়ি সংলগ্ন খান্দানি মার্কেট, লাকসাম, কুমিল্লা। মোবাইল: ০১৭১১৯৫০০৪০, ই-মেইল: sobujpotra.info@gmail.com
কপিরাইট © ২০২৫ সবুজ পত্র । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত