নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রভাবশালী চক্র দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে সরকারি সম্পত্তি দখলে নিতে জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে। এমনই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লার লাকসামে।
জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট কুমিল্লার বিজ্ঞ লাকসাম সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে জেলা প্রশাসকে বাদী দেখিয়ে ৮ জনকে বিবাদী করে ৫২৭/২৪ নং একটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি ছিল সম্পূর্ণ ভুয়া এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ ওঠে। অবশেষে ২০২৫ সালের ২৯ এপ্রিল জেলা প্রশাসক ৮ নং স্মারকের মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন।
তবে মামলাটি চলমান থাকা অবস্থায় ৭ নং বিবাদী চন্দ্রবান বিবি (স্বামী: আবদুল জব্বার, সাং: লাকসাম, কুমিল্লা) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কুমিল্লার একটি সংশোধনযোগ্য নথি জ¦ল করে ২০ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে আদালতে এক সংশোধনী দরখাস্ত দাখিল করেন। যার ভিত্তিতে তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত অব্যাহতির কাগজ ব্যবহার করে তিনি নামজারি ও জমাখারিজের আবেদন করলে বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায় এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি), লাকসাম আবেদনটি বাতিল করেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাবেক লাকসাম ১৯২ নং মৌজা, সিএস ২ নং খতিয়ানে ১৮০২ দাগে ৮৩ শতক ‘নাল’ শ্রেণির ভুমির মালিক ছিলেন নবীনকৃষ্ণ রায় চৌধুরী ও চন্দ্রকুমার রায় চৌধুরী। পরে আরএস খতিয়ানে নবীনকৃষ্ণ রায়ের পুত্ররা বিরেন্দ্র কৃষ্ণ রায়, জিতেন্দ্র কৃষ্ণ রায়, মুধীন্দ্র কৃষ্ণ রায়, সতীন্দ্র কৃষ্ণ রায় ও মতীন্দ্র কৃষ্ণ রায়ের নামে ৪১ শতক ভুমি ৩ নং খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত হয়। বাকি ৪২ শতক ভুমি পূর্ব পাকিস্তান সরকারের পক্ষে কালেক্টর সাহেবের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়, যা স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকারের নামে ১ নং খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত হয়।
প্রশ্ন উঠেছে, সরকারি জমির মতো স্পর্শকাতর সম্পত্তিতে এমন প্রতারণা কীভাবে সম্ভব হলো? প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও আদালতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে স্থানীয় মহলে তীব্র উদ্বেগ ও সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় একাধিক সচেতন নাগরিক বলেন, “সরকারি জমি রক্ষায় প্রশাসনের আরও কঠোর ও স্বচ্ছ ভূমিকা দরকার। নয়তো ভবিষ্যতে আরও মূল্যবান সম্পত্তি হাতছাড়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে।
এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।