লাকসাম প্রতিনিধি :
বাবার বাড়ি আর নানার বাড়ি পাশাপাশি—দূরত্ব সর্বোচ্চ ১০০ গজ। নানার ঘর থেকে বাবার ঘরে যাওয়ার সময় মেহেক মেহেনাজ (অনু) নামের আড়াই বছরের এক শিশু নিখোঁজ হয়। এ ঘটনার দুই দিনের মাথায় বাড়ির কাছাকাছি স্থানের একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে লাকসাম উপজেলার মুদাফ্ফরগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের নাগঝাটিয়া গ্রামের ওই পরিত্যক্ত পুকুর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এর আগে সোমবার দুপুরে নিখোঁজ হয় শিশুটি। পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে পরিত্যক্ত ওই পুকুরের শিশুটি কোনোভাবেই যাওয়ার কথা নয়। তাই ঘটনাটি ভালোভাবে তদন্ত করে দেখার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
শিশু মেহেক মেহেনাজ নাগঝাটিয়া গ্রামের মহিন উদ্দিন মজুমদারের দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে সবার ছোট। পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, নানির হাতে দুপুরের খাবার খেয়ে শিশুটি বাবার ঘরে একা যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয়েছিল।
লাকসাম থানার উপপরিদর্শক হারুনুর রশিদ বলেন, নিখোঁজের পর চারদিকে খোঁজ করেও শিশুটির কোনো সন্ধান এখনো পাওয়া যাচ্ছিল না। সর্বশেষ আজ বিকেলে স্থানীয় লোকজন বাড়ির কাছাকাছি একটি পুকুর থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় শিশুটির নাকে রক্ত দেখা গেছে। তবে শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। নাকের রক্ত সেটা বয়স কম এবং ২৪ ঘণ্টার বেশি পানিতে থাকার কারণেও হতে পারে। তিনি বলেন, ‘শিশুটির মৃত্যু কীভাবে হয়েছে, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।’
শিশু মেহেক মেহেনাজের মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যরা পাগলপ্রায়। বিশেষ করে শিশুটির মা-বাবা তাঁদের মেয়ের জন্য কান্না করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। কোনো কিছুতেই তাঁদের কান্না থামছে না। শিশুটির চাচা মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘অণু (মেহেক মেহেনাজ) আমাদের সবার আদরের। তাঁর নানার ঘরে থেকে আমাদের ঘরে আসা-যাওয়া করতে এক মিনিটও লাগে না। সোমবার দুপুরে নানার ঘর থেকে আসার সময় অণু নিখোঁজ হয়।…যেই পুকুরে লাশ পাওয়া গেছে, সেটি পরিত্যক্ত এবং আমাদের ঘর থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে। সেখানে আমার অবুঝ মেয়েটা কীভাবে যাবে বুঝে আসে না। আমি ঘটনাটি তদন্ত করে দেখার জন্য দাবি জানাচ্ছি।’