মো. মহিবুল ইসলাম:
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে প্রায় ৫ লাখ মানুষের একমাত্র সরকারি হাসপাতাল ৫০ শর্য্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। প্রতিদিন বহিঃবিভাগে শিশু ডাক্তারের পরামর্শ নিতে আসেন প্রায় ৩-৪শ রোগী। এসব রোগীদের সেবা দিতে এখানে দু’জন শিশু ডাক্তার রয়েছে। তবে সোমবার হাসপাতালে কোন শিশু ডাক্তার ছিলো না। তাই চিকিৎসা ছাড়াই ফিরে গেল অসংখ্য রোগী।
সরেজমিনে দেখা যায়, সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে হাসপাতালের বহিঃবিভাগে ভীড় করে অসংখ্য রোগী, তবে কোন ডাক্তার ছিলো না। বেলা ১০ টার পর কয়েকজন ডাক্তার আসলেও শিশু বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ ছিলো তালাবদ্ধ। দুপুর সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত উপস্থিত থেকেও কোন শিশু ডাক্তারকে পাওয়া যায়নি। তাই হতাশ হয়ে চিকিৎসা ছাড়াই বাড়ি ফিরে যান এই বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা অসংখ্য রোগী। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান কর্মকর্তার দায়িত্বহীনতা কারণে এমন পরিস্থিতি বলেন মন্তব্য করেন সচেতন রোগীরা।
হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, বহিঃবিভাগে দু’জন শিশু ডাক্তার রয়েছে, তারমধ্যে একজন ডাক্তার শফিকুল ইসলাম রোববার রাতে জরুরি বিভাগে কর্মরত থাকায় সোমবার তিনি ছুটিতে ছিলেন, তবে অন্য একজন শিশু ডাক্তার এম. শহিদ উল্যাহ কোন ছুটি ছাড়াই অনুপস্থিত ছিলেন। ডাক্তার এম. শহিদ উল্যাহ’র ব্যাপারে সরকারি হাসপাতালে ডিউটি সময় প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখার অভিযোগ রয়েছে অনেক আগে থেকেই। এব্যাপারে যুগান্তরের প্রিন্ট সংস্করণে ২০২৪ সালের ৫ ডিসেম্বর “নাঙ্গলকোটে অফিসে সময়ে প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখেন সরকারি ডাক্তার” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর তাকে শোকজ করা হলেও তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি তার।
জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়নের ভবানীপুর থেকে চিকিৎসা নিতে আসা লিপি আক্তার বলেন, “আমার ছেলের (৩) এলার্জি সমস্যা নিয়ে সকাল ৯টায় হাসপাতালে আসি, এখন ১২টা বাজে তবে শিশু ডাক্তারের চেম্বারের দরজাও এখনো খোলা হয় নাই”।
পৌরসভার হরিপুর হাজি বাড়ি থেকে চিকিৎসা নিতে আসা শাহেনা বেগম বলেন, ” আমার নাতির সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসি ১০টার দিকে তবে কোন শিশু ডাক্তার না পেয়ে এখন ১২ টার দিকে ফিরে যাচ্ছি”।
মৌকরা ইউনিয়নের তিলিপ গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সিরাজুল হক বলেন, ” আমার ছেলেকে শিশু ডাক্তার দেখাতে আসি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তবে এখন বেলা ১২ টা বাজে কিন্তু কোন শিশু ডাক্তার আসে নাই, তাই চলে যাচ্ছি”।
সরকারি হাসপাতালের শিশু ডাক্তার এম. শহিদ উল্যাহ বলেন, “আমি কমিউনিটি ক্লিনিক ভিজিটে গিয়েছি, আমাদের হাসপাতালে মেডিকেল ডাক্তার সংকট তাই আমাকে দিনে অনেক রোগী দেখতে হয়”।
নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান কর্মকর্তা ডা. মু. বেলায়েত হোসেন বলেন, পুরো হাসপাতালে আমার স্টাফ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, কে আসছে, কে আসে নাই, এটার দেখার সময় পাই না আমি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে।