নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি :
নাঙ্গলকোটে জমি সংক্রান্ত বিরোধের প্রতিশোধ নিতে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ এক নারীকে (২২) ঘরে ঢুকে হাতে-পায়ে শিকল বেঁধে এবং মুখে কাপড় বেঁধে ধর্ষণের পর আলমারী ভেঙ্গে নগদ ১লাখ ৭১হাজার টাকা, ২ভরি স্বর্ণালংকার লুট এবং জমিসংক্রান্ত দলিলপত্র নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষণের পর সন্ত্রাসী গ্রুপটি ঘটনাটি কাউকে বললে নারীর জিহবা কেটে নেওয়া এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে ধর্ষিতা নারী জীবনের ভিক্ষা চেয়ে ঘটনাটি কাউকে না বলার প্রতিশ্রুতি প্রদানের পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তারা এক পর্যায়ে নির্যাতিতা নারীর মাথার চুল পর্যন্ত কেটে দেয়।
বৃহষ্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে (১৭এপ্রিল) উপজেলার দৌলখাঁড় ইউনিয়নের কান্দাল উত্তর পূর্বপাড়ায় ঘটনাটি ঘটেছে। পরিবারের লোকজন পুলিশের জরুরী সেবা ৯৯৯ মুঠো ফোনে ফোন দেওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ ঘটনায় নির্যাতিতা নারী বাদি হয়ে ২জন নামীয়সহ ১জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ঘটনার সত্যতা পেয়ে মামলাটি এফ আই আর হিসেবে গ্রহণ করেন। পরে পুলিশ মামলার প্রধান আসামী একই গ্রামের মৃত ছবর আলীর ছেলে ইমাম হোসেন ইমনকে (২৪) গ্রেফতার করেন।
নারীর স্বামী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দৌলখাঁড় ইউনিয়নের কান্দাল উত্তর পূর্ব পাড়া গ্রামের মৃত ছবর আলীর ছেলে ইমাম হোসেনের পরিবারের সাথে ওই নারীর স্বামীর জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। এনিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে মারামারির ঘটনাও ঘটে। পরে ইমাম হোসেন নির্যাতিতা নারীর স্বামীসহ অন্যদের আসামী করে থানায় মামলা করেন। এর মধ্যে গত এক সপ্তাহ থেকে অজ্ঞাত এক ব্যাক্তি ফেসবুকের পেক আইডি ব্যবহার করে ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ থেকে নির্যাতিতা নারীকে ধর্ষণসহ তার স্বামীকে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছেন।
পরে বৃহষ্পতিবার (১৭এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার দিকে মামলার প্রধান আসামী ইমাম হোসেনের নেতৃত্বে ৩/৪জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ দেশীয় অস্ত্র- শস্ত্র নিয়ে নির্যাতিতা নারীর বাড়ির ভবনের ছাদের কাঠের দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে নির্যাতিতা নারীর হাতে-পায়ে শিকল বেঁধে, তালা মেরে এবং কাপড় দিয়ে মুখ বেঁধে আসামীদের একজন ধর্ষণ করে এবং অন্যরা তার শরীরের স্পর্শ কাতর জায়গায় হাত দেয়। তারা এক পর্যায়ে ঘরের আলমারীর তালা ভেঙ্গে নগদ ১লাখ ৭১হাজার টাকা, ২ভরি স্বর্ণালংকার লুট ও জমি সংক্রান্ত মূল্যবান কাগজপত্র নিয়ে যায় এবং নির্যাতিতা নারীর মাথার চুল কেটে দেয়। পরে ওই নারীর পরিবারের লোকজন পুলিশের জরুরী সেবা মুঠো ফোনের ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মহিলার হাত-পায়ের শিকল খুলে দেন এবং আলামত নিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে নারীর স্বামী ঢাকা থেকে বাড়ি এসে শুক্রবার (১৮এপ্রিল) সকালে থানায় মামলা করতে আসেন।
পরে নির্যাতিতা নারী নামীয় ২জনসহ ১জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
নাঙ্গলকোট থানার ওসি এ কে ফজলুল হক বলেন, এ বিষয়ে নির্যাতিতা নারী বাদি হয়ে ২জন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা একজনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার সত্যতা পেয়ে মামলাটিকে এফ আই আর হিসেবে নেওয়া হয়েছে। পরে মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভিকটিমকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামীকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে।