নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি :
শশুরবাড়ীর লোকজনের বঞ্চনা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন এ বছরে অনুষ্ঠিতব্য দাখিল পরীক্ষার্থী ফারজানা আক্তার রাখি (১৭)। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়নের শ্রীহাস্য গ্রামের আলতাফ আলি হাজী বাড়ির আলমগীর হোসেনের মেয়ে ও একই গ্রামের আনু মিয়ার ছেলে রাসেলের স্ত্রী। অসম প্রেম ও প্রণয়ে জড়িয়ে প্রাণত্যাগী রাখি ও তার স্বামী ১০ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য দাখিল পরীক্ষার পরীক্ষার্থী ছিলেন। তারা শ্রীহাস্য নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহন করার কথা ছিলো।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নিজ শোবার কক্ষের ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁছিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে বলে জানিয়েছে পরিবারের লোকজন। এ ঘটনার পর থেকে রাসেল ও পরিবার পলাতক রয়েছে।
পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী থাকাকালীন সময়ে ২০২৩ সালে রাসেল ও রাখি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং পরিবারের অমতে পালিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর তাদের গোপন বিয়ে প্রকাশ্যে আসলে রাসেলের পরিবার তাদের এ বিয়ে মেনে নেয়নি।
মাঝেমধ্যে রাখি স্বামী রাসেলের বাড়িতে গেলে রাসেলের পরিবার তাকে নানা ধরনের নিপীড়ন করতো। সর্বশেষ ঈদুল ফিতরের পর রাসেল রাখিকে বাড়িতে নিয়ে গেলে রাসেলের পরিবার মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। এই ঘটনার পর মানসিক অশান্তিতে ভুগতে থাকে। একপর্যায়ে সোমবার দিবাগত রাতে পিত্রালয়ে নিজ শোবার ঘরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁছিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
ফারজানা আক্তার রাখির দাদী আয়শা বেগম বলেন, ‘আমার নাতনিকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করত রাসেল ও তার পরিবার। সেজন্য রাখী আত্মহত্যা করেছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।’
অভিযোগের সত্যতা জানতে রাসেলের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি ও রাসেলের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.কে ফজলুল হক বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।