বিশেষ প্রতিনিধি:
আপন পরিবারের কেউ শত্রুর মতো আচরণ করলে বা নিজেদের পক্ষের কেউ বিরোধী পক্ষের হয়ে কাজ করলে তাকে বলা হয় ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ । একসময় তারা পায় বিশ্বাসঘাতকের পদবী। এমন অভিযোগে অভিযুক্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রেস উইং পরিচয়ধারী সামসুদ্দিন দিদারের বিরুদ্ধে ।
দিদারের গ্রামের বাড়ী কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলার দাউদপুর গ্রামের মরহুম মাস্টার তাহের সন্তান। থাকেন ঢাকায় । পরিচয়ে বেড়ান বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত । গ্রামের বাড়ী নাঙ্গলকোট হলেও এলাকায় বিএনপি রাজনীতির সাথে কখনও সম্পৃক্ত ছিলেন না । ফলে এলাকার মানুষ তাকে ভালভাবে চিনেন না। ঢাকাস্থ নাঙ্গলকোট জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আয়োজনে ইফতার মাহফিলে হামলা চালিয়ে তা পন্ড করে আলোচনায় আসেন সামসুদ্দিন দিদার ।
উল্লেখ্য, গত ১০ মার্চ সোমবার ঢাকাস্থ নাঙ্গলকোট উপজেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে অনুষ্ঠানটি বানচালের চেষ্টা করা হয়। অভিযোগ শামসুদ্দিন দিদারের বিরুদ্ধে । তিনি অনুষ্ঠান বাতিল করতে দুই দিন আগ থেকে আয়োজকদের হুমকি দিতে থাকেন । আয়োজকদের হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, “তোরা যাকেই অতিথি করিস, আমি তাকেই দেখে নেব। তোরা যদি তারেক রহমানকেও অতিথি করিস, আমি তাকেও আসতে বাধা দেব। যেমন হুমকি তেমন কাজ । আয়োজকেরা অনুষ্ঠান শুরু করার আগেই দিদার ও তার সঙ্গী সন্ত্রাসী আসিফের নেতৃত্বে ১৫-২০ সন্ত্রাসী সহ লোহার রড ও লাঠি সোটা নিয়ে উপস্থিত অতিথিদের উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে এবং অনুষ্ঠান পন্ড করে দেয় ।
সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করা হয়,শামসুদ্দিন দিদার একজন চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক । তিনি নিজেকে বেগম খালেদা জিয়ার প্রেস সচিব বলে দাবি করেন এবং এই পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করছেন । চাঁদার টাকায় তিনি গ্রামের বাড়ীতে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে বিলাসবহুল বাড়ী নির্মাণ করেন । চোখ ধাঁধানো বাড়ী দেখে নাঙ্গলকোটে জনমনে প্রশ্ন, দিদারের এই অর্থের উৎস কি?
অভিযোগ কারীরা বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের সময়ে বিএনপির গুলশানের কার্যালয় থেকে কিছু গোপনীয় ডিভাইস গোয়েন্দাদের হাতে পৌঁছে । আর এ কাজটা এই সামসুদ্দিন দিদার ই করেছেন বলে তারা অভিযোগ করেন । বিনিময়ে তিনি গোয়েন্দাদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা নেন ! কারণ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানের এ কার্যালয় অবরুদ্ধ ছিল, বিএনপি’ দলীয় নেতা কর্মীরা উক্ত স্থানে যেতে না পারলেও সে সময় দিদার প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে অবাধ যাতায়াত করতেন । সুতরাং তিনি টাকার বিনিময়ে ডিভাইস পাচার করেছেন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে আরো বলা হয়, চুরি, চাঁদাবাজি, অথবা অনৈতিক উপায় ছাড়া এই বিলাসবহুল বাড়ী নির্মাণ ও জীবনযাপন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই তারা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছেন, শামসুদ্দিন দিদারের সম্পদের উৎস খতিয়ে দেখা হোক এবং তার অবৈধ আয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। সম্মেলন থেকে দাবী উঠেছে, শামসুদ্দিন দিদারকে অবিলম্বে প্রেস ক্লাবের সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করতে হবে। মো. ইকবাল হোসেন আসিফ ও মোতালেবের নেতৃত্বে যারা সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শামসুদ্দিন দিদারের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হবে এবং তাঁর চাঁদাবাজির সকল কর্মকাণ্ড প্রকাশ্যে আনতে হবে। ভবিষ্যতে সাংগঠনিক কার্যক্রমে কোনো বাধা সৃষ্টি করা হলে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। নাঙ্গলকোটে শামসুদ্দিন দিদারকে অবাঞ্চিত করা হবে। তাই দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি ঢাকাস্থ নাঙ্গলকোট উপজেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের।