কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লা-৪ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাবেক ডিরেক্টর নাছির উদ্দিন মানিকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুনীতির মাধ্যমে ৪ কোটি টাকা আত্মসাধের অভিযোগ উঠেছে। তিনি নাঙ্গলকোট উপজেলা জোড্ডা পশ্চিম ইউপির আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ৪ কোটি টাকার অনিয়ম দুনীতি নিয়ে তার আপন ভাতিজা শাহাদাৎ হোসেন সুমন দুনীতি দমন কমিশন দুদক ও নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরের একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৪ সালে কুমিল্লা-৪ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিরেক্টর দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময় একই ইউপির মানিকমুড়া গ্রামে নতুন বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ দিয়ে শেয়ারবাড়ির রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন। সেই সঙ্গে বিদুৎতের খুটি বাবত পাশ্ববর্তী মান্দ্রা গ্রামের দীঘির পাড়া এলাকার ইউসুফ মিয়ার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে যান তিনি। এ ভাবে জোড্ডা পশ্চিম ইউপির ২২০টি পরিবারের কাছে থেকে ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ডিরেক্টরের দায়িত্ব পাওয়ার পর পাল্টে যায় জীবনযাত্রার মান। ভাগিয়ে নিয়েছেন ৪ কোটি টাকা। এ যেন হাতে আলাউদ্দিনের চেরাগ পাওয়ার মতোন। যদিও একটা সময় নাছির উদ্দিন সংসার চালাতে হিমসিম খেতেন।
বর্তমানে নিজ এলাকায় তিনটি এজেন্ট ব্যাংক ও সুপার মার্কেট সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার। মান্দ্রা বাজারে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ভৌগই বাজারে আল আরাফাহ ইসলামি ব্যাংক, মন্নারা বাজারে আল আরাফাহ ইসলামি ব্যাংক, মান্দ্রা দক্ষিন বাজারে একটি স’মেল ও মান্দ্রা মধ্যে বাজার নিউ সুপার মার্কেট সহ বিভিন্ন অবৈধ সম্পদের মালিক হয়।
এ বিষয়ে কথা হয় তার ভাতিজা শাহাদাৎ হোসেন সুমনের সঙ্গে তিনি বলেন, তার চাচা নাছির উদ্দিন মানিক একটা সময় সংসার চালাতে হিমসিম খেত। যখন তিনি পল্লী বিদ্যুৎ ডিরেক্টর হয়েছেন তার পর থেকে আর পিছনে তাকাতে হয়নি। পাল্টে গেছে জীবনের চিত্র। বর্তমানে তিনি ৪ এজেন্ট ব্যাংক ও একটি সুপার সর্পের মালিক। সে আরো বলেন, তার পিতা শাহ আলম মারা যাওয়ার পর তাদের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করেন। সম্পত্তির হিসাব দিতে বলে, চাচা মানিক বিভিন্ন হুমকি দুমকি দেন।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, ৫ আগস্টের পরে থেকে নাছির উদ্দিন মানিক আত্মগোপন রয়েছেন। তিনি ৩ মেয়ে ও ১ ছেলে সহ পরিবার নিয়ে কুমিল্লা শহরে বসবাস করছেন। সেই সঙ্গে ছেলে মেয়েদেরও পড়াশোনা করাচ্ছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নাছির উদ্দিন মানিক বলেন, সম্ভবত ২০১৪ সালের দিকে তিনি কুমিল্লা-৪ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিরেক্টর ছিলেন। এখন তিনি রোজা আছেন। যা বলার ইফতারের পরে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলবেন। পরে তিনি আর ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে কুমিল্লা-৪ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নাঙ্গলকোট জোনাল অফিসের ডিজিএম মুক্তার হোসেন বলেন, এখনে আসছি মাত্র কয়েক দিন হয়। আগে কি হয়েছে আমার জানা নেই। কেউ অনিয়ম দুনীতি করলে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখব।
কুমিল্লা-৪ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম আতিকুর রহমান বলেন, ২০১৪ সালে তিনি দায়িত্ব ছিলেন না। খোঁজ খবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল আমিন সরকার বলেন, অভিযোগের আলোকে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।