• সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ০২:৫০ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ঢাকাস্থ লাকসাম-মনোহরগঞ্জ ছাত্র ফোরামের রমজান শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাবেক ডিরেক্টর নাছির উদ্দীন মানিক বিরুদ্ধে ৪ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ কুলি থেকে অঢেল সম্পদের মালিক আব্দুল মালেক লাকসামে আ’লীগ নেতার বাড়িতে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৫ মনোহরগঞ্জে নাগরিক উন্নতি সংগঠনের উদ্যোগে ইফতার মাহ্ফিল মনোহরগঞ্জে ইসলামী আন্দোলনের সম্মেলন ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত লাকসাম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ-২ মাহে রমজানের শিক্ষা কাজে লাগিয়ে সমাজে ন্যায়-ইনসাফ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে- সফিকুর রহমান স্থানীয় ক্ষুদ্র চাষীসহ বিপাকে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত টাকায় নিমসার বাজার ইজারা! কুমিল্লা সমিতি ঢাকার ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত
সর্বশেষ
ঢাকাস্থ লাকসাম-মনোহরগঞ্জ ছাত্র ফোরামের রমজান শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাবেক ডিরেক্টর নাছির উদ্দীন মানিক বিরুদ্ধে ৪ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ কুলি থেকে অঢেল সম্পদের মালিক আব্দুল মালেক লাকসামে আ’লীগ নেতার বাড়িতে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৫ মনোহরগঞ্জে নাগরিক উন্নতি সংগঠনের উদ্যোগে ইফতার মাহ্ফিল মনোহরগঞ্জে ইসলামী আন্দোলনের সম্মেলন ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত লাকসাম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ-২ মাহে রমজানের শিক্ষা কাজে লাগিয়ে সমাজে ন্যায়-ইনসাফ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে- সফিকুর রহমান স্থানীয় ক্ষুদ্র চাষীসহ বিপাকে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত টাকায় নিমসার বাজার ইজারা! কুমিল্লা সমিতি ঢাকার ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

নবাব ফয়জুন্নেছা জাদুঘরের গেট দখল: ছৈয়দ আলী গংদের গ্রেফতারের দাবি

Reporter Name / ২০ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ, ২০২৫

বিশেষ প্রতিনিধি
কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার পশ্চিমগায়ে অবস্হিত নারী শিক্ষার অগ্রদূত নবাব ফয়জুন্নেছা জাদুঘরের ঐতিহাসিক গেট জবর দখলকারী ভুমিদস্যু ছৈয়দ আলী,তার ছেলে ইব্রাহিম, আরমান ও সোহেল। তাদের আইনের আওতায় আনে গ্রেফতার ও বিচার এখন সময়ের দাবী।
উল্লেখ্য, সরকার নবাব ফয়জুন্নেছার স্মৃতি বাড়ীসহ ৪.৫৪ একর জয়গা ২০১৭ সালে প্রত্মতত্ব সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে। যাতে জাতীয় জাদুঘরে ৯ম শাখার কর্মকাণ্ড চালু হয়। জাদুঘরের ঐতিহাসিক পূর্বদিকের গেট গত ৩১অক্টোবর বেঅইনীভাবে ওয়াল তুলে পৌরসভার অর্থায়নে নির্মিত পাকা রাস্তা বন্ধ কর এই ভুমিদস্যু পরিবারটি। যা প্রচলিত আইন লংঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধও বটে।
নবাব ফয়জুন্নেছা জাদুঘরে পুর্ব দিকের গেট বন্ধ আভাস পেয়ে ২৫আক্টোবর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল হাই সিদ্দিকী ঘটনাস্থলে যান। এব্যাপারে তিনি ছৈয়দ আলীকে সতর্ক করেন। নবাব বাড়ীতে নিত্যদিন কাজকর্ম করা পরিবারগুলোর মধ্যে মুরহুম বাহারাম আলী ও তার পরিবারের সদস্যরা অন্যতম। নবাব বাড়িতে কাজকর্ম করার পারিবারিক সুবাদে এই ছৈয়দ আলীর পরিবারের সদস্যদের অঘাত যাতায়াত ছিল জমিদার বাড়িতে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ও নবাব বংশধরদের সরলতার সুযোগ নিয়ে তারা এখন পুরো নবাববাড়ি গ্রাসের চক্রান্তে লিপ্ত।
জানা গেছে, চাচা ও ভাতিজা বিপু চক্রের কাছে এখন লাকসাম ভুমি অফিস জিম্মি। পশ্চিমগাঁও পিছপাড়ার বাসিন্দা ভুমিদস্যু চাচা ভাতিজা চক্রের সাথে ছৈয়দ আলীর সন্তান ইব্রাহিম, আরমান, সোহেলও সমান তালে এগিয় যাচ্ছে।
সম্প্রতি লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার কায়সার হামিদ ও ওয়াকফ্ পরিদর্শক আব্দুল কাদেরের তদন্ত প্রতিবেদনে ভুমিদস্যু ছৈয়দ আলী গংদের মুখোশ উন্মোচিত হয়ে যায়।
উল্লেখ্য,নবাব বাড়ির ঐতিহাসিক উক্ত পথের জায়গাটির মালিকানা দাবি করে ভুমিদস্যু ছৈয়দ আলী কুমিল্লা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে আদালতে একটি মামলা করেন। মামলাটি বিচারাধীন। মামলা নং নং৭৩/২০২৪। যাতে বিবাদী রয়েছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সচিব ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসক স্বয়ং।
কুমিল্লার বিজ্ঞ সহকারী জজ বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য লাকসাম উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমিকে নির্দেশ দেন। কিন্তু মামলাটি চলমান অবস্থায় গত ৩১.অক্টোবর ২০২৪ ছৈয়দ আলী আইনের তোয়াক্কা না করেই পাকা দেওয়াল নির্মাণের মাধ্যমে নবাব বাড়ির প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেন। এই দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বদলী জনিত ব্যস্ততার কারনে এসিল্যান্ড সিফাতুন নাহারকে ঘটনাস্থলে পাঠান। কিন্তু এসিল্যান্ড রহস্যজনক কারনে ইউএনও সিদ্দিকীর ২৫ আক্টোবরের নির্দেশনার ধারাবাহিকতা রক্ষা করেনি। পৌরসভার অনুমোদিত এই রাস্তাটি খুলে না দিয়ে তিনি চরম দায়িত্বহীতার পরিচয় দিয়েছেন। সরকারী গেজেটের চৌহদ্দিতে এই জায়গা প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ হিসেবে উল্লেখ থাকলে এসিল্যান্ড তা কেন আমলে নেননি তা তদন্তের দাবী রাখে।
বিষয়টি নিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হলে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আতাউর রহমান টেলিফোনে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন। যার প্রেক্ষিতে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব কায়সার হামিদ তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। (ফটোকপি সংযুক্ত)।
ধর্ম উপদেষ্টা খালিদ হাসানের নির্দেশে পরিদর্শক আবদুল কাদেরের নেতৃত্বে ওয়াকফ প্রশাসনও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। যাতে মোতওয়াল্লী সৈয়দ মাসুদুল হক, ভুমিদস্যু আবুল কালাম বিপু ও ছৈয়দ আলীর থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়ে।
তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, আরএস নকশায় নবাব বাড়ির পুর্বদিকের গেটে আরএস ২৪২৯ দাগে পাকা ইমারত দৃশ্যমান। ছৈয়দ আলীর দলিলে বর্ণিত চোহদ্দি উত্তরে,কিন্তুু সে দখল করতে এসেছে দক্ষিণ প্রান্তে। হিস্যা অনুযায়ী দলিলদাতা ৫৯৯৩ দাগে ১ডিং ৯ সেন্ট জায়গার মালিক ছিলেন। কিন্তু ছৈয়দ আলী দলিল করছে ৫ডিং। জাল জালিয়াতির তিনি মাধ্যমে খারিজ করিয়েছেন ২.৭৫ ডিং জায়গা। এসব অনিয়ম তদন্ত প্রতিবেদনে ধরা পড়ে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে লাকসাম পৌরসভা ছৈয়দ আলীকে নবাব ফয়জুন্নেছা বাড়ির পুর্ব দিকের গেটের বন্ধে উল্লেখিত অবৈধ স্হাপনা অপসারণের নির্দেশ দেন। কিন্তুু চূড়ান্ত এই নোটিশে কার্যকারিতা রহস্যজনক কারনে থমকে আছে।
উল্লেখ্য নবাব ফয়জুন্নেছা বাড়ির পুর্ব দিকের গেটে দখল করতে গিয়ে ভুমিদস্যু মিয়া প্রায়াত সৈয়দ রফিকুল হক বাচ্চু সাহেবের মতো একজন সজ্জন ও সন্মানিত লোকের মান সন্মান ক্ষুন্ন করেছেন।
নবাব ফয়জুন্নেছার স্মৃতি বিজড়িত লাকসামের পশ্চিমগাঁয়ে বাচ্চু সাহেব ছিলেন আশির দশকের কিংবদন্তি।তিনি নবাব পরিবারের সদস্য হয়েও প্রথম যুক্তরাজ্যের রয়েল এয়ারফোর্সে উচ্চপদে চাকুরী নিয়েছিলেন। চালচলন, স্বভাব চরিত্র ও মানবিকতায় তিনি ছিলেন অসাধারণ। তার স্ত্রী বেগম ইরানি হকও ছিলেন একাধারে কবি, সাহিত্যিক ও মানবিক ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন। বাচ্চু সাহেব নবাব ফয়জুন্নেছা ওয়াকফ এস্টেটের কোন দায়িত্বে তিনি ছিলেননা। উত্তরাধিকার সুত্রে যা জায়গা সম্পদ পেয়েছেন এর মধ্যেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখেছেন।
বাচ্চু সাহেব ও বেগম ইরানি হক দম্পতি সংসারে ছিল দুই কন্যা সন্তান। সৈয়দ নাসরিন রাব্বানী ও সৈয়দা সাব্বিন ইকবাল। বিয়ের পর তারা চলে যান স্বামীর সংসারে। দুজনেই এখন স্বপরিবারে বসবাস করেছেন আমেরিকায়। দু মেয়ে প্রবাসে থাকায় বাচ্চু সাহেব ও বেগম ইরানি হক পরবর্তীতে লালন পালন করেন আলীকে। বিয়ে করান নবাব বাড়ির দৈনন্দিন কাজকর্মের সাথে সংশ্লিষ্ট পশ্চিমগাও পিছপাড়ার বাহারাম আলীর মেয়ে আয়েশাকে। ছোট বোন আয়েশার সুবাদে ছৈয়দালী মিয়ারও নবাব বাড়িতে ছিল আঘাত যাতায়াত। চতুর ছৈয়দালী মিয়া নবাব পরিবারের সদস্যদের সরলতার সুযোগ নিয়ে দিঘী,পুকুর,জলাশয়, জমি, লিজ নিতো।
যা এক পর্যায়ে বেচাকেনার পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছে। এরমধ্যে লিজ দলিলে স্বাক্ষরের কথা বলে নাকি জমি বিক্রয় দলিলেও স্বাক্ষর নিয়ে ত্যকালীন সময়ে আলোচনার পাত্র হয়েছিলেন ছৈয়দালী মিয়া।

বেগম ইরানি হক ও সৈয়দ রফিকুল হকের মৃত্যুর প্রায় ৩৫ বছর ও বেগম ইরানী হকের মৃত্যুর ১৬ বছর পর ভুমিদস্যু মিয়া এখন আবার এই ঐতিয্যবাহী নবাব পরিবারের কাঠগড়ায় পড়েছে। নবাব বাড়ির পূর্ব দিকের গেটের জায়গাটি ১৯৮৪ সালে সৈয়দ রফিকুল হকের কাছ থেকে ক্রয়ের দাবি করেন তিনি। যার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। কারণ সৈয়দ রফিকুল হক কখনোই নবাববাড়িতে প্রবেশের পথটি বিক্রির কোন দলিল মিয়াকে দেন নাই। যা সম্প্রতি লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার কায়ছার হামিদ ও ওয়াকফ পরিদর্শক কায়ছার হামিদের তদন্ত প্রতিবেদনে ধরা পড়ে। ছৈয়দালী মিয়া জালিয়াতি নবাব বাড়ির গেটটি বন্ধের মাধ্যমে প্রায়াত সৈয়দ রফিকুল হক ও তার পরিবারের সদস্যদের অভিযুক্ত করতে চেয়েছিলেন তা এখন পরিস্কার হয়ে গেছে।
মিডিয়ায় নবাব বাড়ির পূর্ব দিকের গেটের জায়গা বেচাকেনার সাথে সৈয়দ রফিকুল হকের নাম আসায় এ ব্যাপারে প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার যুক্তরাষ্ট প্রবাসী কন্যা সৈয়দ নাসরিন রাব্বানী। তিনি টেলিফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, নবাব বাড়ির ঐতিহাসিক প্রবেশ পথের জায়গা বিক্রির সাথে আমার বাবাকে জড়িয়ে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে মোটেও সঠিক নয়। জীবদ্দশায় আমার আব্বা ও আম্মা আমাদেরকে এই জায়গা বিক্রির ব্যাপারে কিছুই বলে যাননি। আমার পিতা তথা আমরা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ছিলাম, তাই নিজের বাড়ির প্রবেশপথের জায়গা বিক্রি করার প্রশ্নই আসেনা।
সৈয়দ নাসরিন রাব্বানী আরো বলেন, অভিযুক্ত মিয়া ও তার পরিবার সদস্যরা আমাদের বাড়িতে ফুটফরমেস কাজের সুবাধে প্রায় আসা-যাওয়া করত। সেই সুগোগ কাজে লাগিয়ে এই মিয়া ত্যকালীন সময়ে আমাদের পরিবার ও নবাববাড়ি অন্যদের সাথে এই ধরনের আরো কিছু জালিয়াতি করেছিল।সর্বশেষ আমার মুরহুম পিতাকে জড়িয়ে নবাব বাড়ীতে গাড়ী নিয়ে প্রবেশের একমাত্র পথটি বন্ধ করে শুধু জালিয়াতি নয়, আইনের প্রতি তার দৃষ্টতার আরেকটি চূড়ান্ত উদাহরণ। এ ব্যাপারে মিয়ার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি।


আপনার মতামত লিখুন :
More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা