স্টাফ রিপোর্টার
শয়তান ধরবেন ? তাহলে আগে শয়তান চেনার চেষ্টা করুন। এরপর ধরুন। শয়তান সাধারণত দুই ধরনের। একটা জিন শয়তান, আর অন্যটা মানব শয়তান। আবার মানব শয়তান দুই ধরনের। একটা মানব রুপি অন্যটা দানবরুপি। বর্তমান সরকার শয়তান শিকারের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আমার মতো অনেকেই ধারণা করেছিল প্রথম ধাপেই দানবরুপি শয়তানগুলোকে শিকার করবে। তবে কোন ধরনের শয়তান শিকার ধরবেন পূর্বে ঘোষণা না দিলেও শিকারের ধরন দেখে মনে হচ্ছে আওয়ামীলীগ সমর্থক যারা শুধু তাদেরই শিকার করবেন। বুঝা গেল সরকারের দৃষ্টিতে আওয়ামীলীগ সমর্থকেরাই শয়তান । শিকার করেন। সমস্যা বা আপত্তি নাই। কিন্ত আপত্তি হল দানবরুপি শয়তানদের শিকার না করে নীরিহদের শিকার নিয়ে। যে সব দানবেরা আওয়ামীলীগ সাইনবোর্ড ব্যবহার করে ক্ষমতার মসনদে বসে কোটি কোটি দুর্নীতি করেছে, আগে তাদের ধরেন। যারা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য করেছে, আগে তাদের ধরেন। যারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করেছে আগে তাদের ধরেন। যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে তাদের ধরলে কারো আপত্তি থাকবে না ।
সেই সব দানবরুপি শয়তানেরা ক্ষমতাকে পুঁজি করে কোটি কোটি টাকা মালিক হয়ে এখন স্যুট, বুট, কোট টাই পরে দিব্যি ঘুরে বেড়ায় ! কিন্ত শয়তান শিকারীরা এদের না ধরে ধরছে যারা ক্ষমতার স্বাদ আল্লাদ কিছুই ভোগ করেনি তাদেরকে ।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে দেখলাম, হান্ট শুরুর পর নাঙ্গলকোট উপজেলায় আওয়ামীলীগ সমর্থিত যে কয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এদেরকে ভালভাবেই চিনি । আওয়ামীলীগ করার কারণে হয়তঃ তারা ডেভিল । তবে মানবরুপে । অপরদিকে দানবরুপিরা প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছে কিন্ত তাদের ধরা হচ্ছে না ? এমন প্রশ্ন অনেকের ।
উল্লেখ্য, নাঙ্গলকোটে যিনি সবচেয়ে বড় ডেভিল তিনি হলেন সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ইউসুফ ভূঁইয়া । সাবেক অর্থমন্ত্রী লোটাস কামালের অতি প্রিয় এ দানবরুপি ডেভিল । লোটাস কামাল ক্ষমতার জোরে তাকে দুই দফা ভাইস চেয়ারম্যান বানিয়েছে.। একই সাথে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকও করেছে । সর্বশেষ উপজেলা চেয়ারম্যান পদেও মনোনয়ন দিয়ে প্রশাসনিক যন্ত্র ব্যবহার করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করতে চেষ্টা করেছিল। লোটাস কামালের ক্ষমতাকে ব্যবহার করে শতকোটি টাকার মালিক ইউসুফ। লোটাস কামাল কারো ফোন রিসিভ না করলেও ইউসুফের কল ধরার সুযোগ না পেলে তাকে কলব্যাক করতো। ৫আগষ্ট পরবর্তিতে আওয়ামীলীগ নেতাদের প্রকাশ্যে দেখা না গেলেও লোটাস কামাল প্রিয় ইউসুফকে স্যুট, বুট ও টাই পরে ফুর ফুরে মেজাজে আচার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে দেখা যাচ্ছে । সম্প্রতি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এমরান কবিরের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে ইউসুফ সহ লোটাস কামাল কর্তৃক সুবিধাভোগীদের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা গেছে । আশ্চর্যের বিষয় হল, নাঙ্গলকোটে প্রায় ২০-২৫টি রাজনৈতিক মামলা দায়ের হলেও রহস্যজনক ভাবে লোটাস কামালের অনুসারীরা কোনও মামলায় আসামী হয়নি এবং কেহই অপারেশন ডেভিল হান্টের আওতায় আসেনি । অপরদিকে এ পর্যন্ত যাদের ধরা হচ্ছে, তারা আওয়ামীলীগ সমর্থিত হলেও মূলত ক্ষেতে খামারে কাজ করা চাষাভুষা মানুষ। এসব চাষাভুষা মানুষকে ধরতে যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনার মানে মশা মারতে কামান দাগান। এদেরখবর দিলেই স্বেচ্ছায় থানায় গিয়ে হাজির হয়ে যাবে। এতে সরকারের খরচও সাশ্রয় হবে । সুতরাং আওয়ামীলীগ সমর্থিত হলেই ডেভিল না ভেবে দানবরুপি ডেভিলদের শিকার করুন। জনগণ বাহবা জানাবে ।