মো. মহিবুল ইসলাম
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আওয়ামী লীগ নেতার দাপট দেখিয়ে উপরস্থ কোন কর্মকর্তাকে তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছামতো চেম্বারে আসা-যাওয়া করেন নাক, কান, গলার ডাক্তার মনিরুল ইসলাম। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হলেও নেতার দাপট দেখিয়ে বেঁচে যান তিনি।
মনিরুল নিজেকে নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আবু ইউসুফের ভাগ্নির জামাই পরিচয় দিয়ে থাকেন। হাসপাতালে আসা-যাওয়া করেন যেমন খুশি তেমন। তোয়াক্কা করেন না খোদ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মু. বেলায়েত হোসেনকে। আওয়ামী লীগ মামার পতন হলেও পতন হয়নি এই ডাক্তারের দাপটের।
অনুসন্ধানে জানা যায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগে সকাল ৮টার থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত রোগী দেখার কথা থাকলেও এই ডাক্তার বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে, কাউকে জবাবদিহি না করে নিজের ইচ্ছামতো বেলা সাড়ে ১০টার পর হসপিটালে প্রবেশ করেন। এবং দুপুর ১টার মধ্যে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। আবার কখনো তার ইচ্ছা হলে ছুটি ছাড়াই হাসপাতালে অনুপস্থিত থাকেন তিনি। এতে ভোগান্তির চরম আকার ধারণ করে নাক, কান, গলার সমস্যা নিয়ে সেবা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে।
সেবা নিতে আসা আবুশা বেগম নামে একজন জানান, “কানের সমস্যা নিয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় হাসপাতালে আসি। বেলা ১১ টা বাজতেছে কিন্তু ডাক্তার এখনো আসে নাই। আবার দেরি করে হাসপাতালে আসলেও সমস্যা, ডাক্তার চলে যায়”।
মিজানুর রহমান নামে আরেক রোগী জানান, “ডাক্তার মনিরুল ইসলাম বেলা ১১ টায় হাসপাতালে এসে চেম্বার বসে রোগী না দেখে তিনি নাস্তা করেন। পরে আস্তেধীরে রোগী দেখা শুরু করেন। কয়েকজন রোগী দেখে আবার চেম্বার ছেড়ে চলে যান”।
এসব অভিযোগের বিষয় জানতে ডাক্তার মনিরুল ইসলামের চেম্বারে গেলে তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতার ভাগ্নির জামাই পরিচয় দেন। এবং কোন বক্তব্য না দিয়ে হকার ডেকে সাংবাদিককে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন।
এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মু. বেলায়েত হোসেন বলেন, “তার ব্যাপারে আগেও একাধিকবার অভিযোগ এসেছে। এবং তাকে শোকজ করা হয়েছে। কিন্তু তিনি সংশোধন হয় নাই। তাকে আবার ডেকে এনে জিগ্যেস করা হবে”।