• শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম
চৌদ্দগ্রাম বাতিসা ১নং ওয়ার্ড চাঁন্দকরা বিএনপির গ্রাম কমিটি গঠন ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কর্মী সমর্থকদের বুকে আগলে রাখা নেতাদের দল মুল্যায়ন করা উচিত- বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মাহিদুর রহমান শ্বশুর বাড়ি থেকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রেফতার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত সাতবাড়িয়ায় দাফনের চার মাস পর যুবকের লাশ উত্তোলন লাকসামে অবাঞ্চিত পীরের ওরশ আয়োজন ঘিরে উত্তেজনা! মনোহরগঞ্জে জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা লাকসাম ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজ অভিভাবক সমাবেশ নাঙ্গলকোটে জোরপূর্বক জায়গা দখলের অভিযোগ কুমিল্লায় ক্যাবের মানববন্ধন র্যালী ও স্মারকলিপি প্রদান!
সর্বশেষ
চৌদ্দগ্রাম বাতিসা ১নং ওয়ার্ড চাঁন্দকরা বিএনপির গ্রাম কমিটি গঠন ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কর্মী সমর্থকদের বুকে আগলে রাখা নেতাদের দল মুল্যায়ন করা উচিত- বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মাহিদুর রহমান শ্বশুর বাড়ি থেকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রেফতার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত সাতবাড়িয়ায় দাফনের চার মাস পর যুবকের লাশ উত্তোলন লাকসামে অবাঞ্চিত পীরের ওরশ আয়োজন ঘিরে উত্তেজনা! মনোহরগঞ্জে জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা লাকসাম ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজ অভিভাবক সমাবেশ নাঙ্গলকোটে জোরপূর্বক জায়গা দখলের অভিযোগ কুমিল্লায় ক্যাবের মানববন্ধন র্যালী ও স্মারকলিপি প্রদান!

শরীরে বুলেট নিয়ে মনোহরগঞ্জের জনি ও রাকিব’র মানবেতর জীবন যাপন

Reporter Name / ২৪ Time View
Update : রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪

মনোহরগঞ্জ প্রতিনিধি
শরীরে বুলেট নিয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়া কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের জনি (২০) ও রাকিব (২১)। আন্দোলনে অংশ নিয়ে বুলেটের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত জনি চিকিৎসার অভাবে নিজ বাড়িতেই থাকছেন পরিবারের বোঝা হয়ে। গুলিবিদ্ধ হয়ে নিজ বাড়িতেই পঙ্গুত্ব বরণ করছেন আহত রাকিব। আহত জনির বাড়ি উপজেলার হাওরা গ্রামে ও রাকিবের বাড়ি উপজেলার চিখুটিয়া গ্রামে। ছাত্রদের অপরিসীম ত্যাগের বিনিময়ে দ্বিতীয়বারের মতো দেশ স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু তাদের খোঁজ কেউ রাখেনি। যথাযথ চিকিৎসার অভাবে তাদের দুজনেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজালা রানী চাকমা চিকিৎসা সেবায় তাদের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন দুই পরিবারের সদস্যরা।
আন্দোলনে অংশ নিয়ে ৫ আগষ্ট চট্রগ্রামের লালদিঘীপাড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন জানে আলম জনি। অন্ততঃ দুই শতাধিক চররা গুলির আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায় তার পুরো শরীর। সেদিন ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরাসরি অংশ নিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা জানান তিনি। অচেতন অবস্থায় রাস্তা থেকে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সার্জারী ডাক্তারকে দেখানোর পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় কিছু ঔষধ দিয়ে পরদিন তাকে সেখান থেকে রিলিজ দেয়া হয়। উপায়ান্তর না দেখে বুলেটের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত শরীর নিয়ে পরিবারের লোকজন তাকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায়। তার বাড়ি মনোহরগঞ্জের বাইশগাঁও ইউপির হাওরা গ্রামে। চিকিৎসার পরবর্তী কার্যক্রম বাড়ি থেকেই শুরু করেন তার পরিবার।
পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। শরীরে বিঁধে যাওয়া এসব বুলেটসহ তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে তার চিকিৎসাসেবা। ওই হাসপাতালে ভর্তির অনুমতি না পেয়ে সেখান থেকে বাড়ি ফেরেন। শরীরের ভিতরে থাকা অসংখ্য গুলি নিয়ে প্রতিনিয়ত যন্ত্রনায় ভূগছেন জনি। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহায়তায় কুমিল্লা সিএমএইচ হসপিটালে চিকিৎসা নিতে যান। সেখানে ৮টা গুলি বের করা হয় শরীর থেকে। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারনে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়াও তাদের জন্য কষ্টসাধ্যের। সেখানে একটি আতর দোকানে কাজ করতেন তিনি। মাইনে পেতেন সাত হাজার টাকা। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর দোকানের চাকুরিটাও হারাতে হয় তাকে। বন্ধ হয়ে যায় রোজগারের পথটিও। বর্তমানে অর্থাভাবে ঔষধ কিনতে পারছেন না বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।
একই তারিখে ঢাকার উত্তরায় গুলিবিদ্ধ হন রাকিব হোসেন। দূর্ভাগ্যবশতঃ তার নাভীর ডান পাশে গুলি লেগে মেরুদন্ড দিয়ে বের হয়। পথচারিরা তাকে নিয়ে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করান। ওখান থেকে স্থানান্তর করা হয় উত্তরার কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্র সরকারি হাসপাতালে। ৩ ঘন্টা থাকার পর নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ৬ আগষ্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই হয় অপারেশন। ১৯ দিন পর পাঠানো হয় রাজধানীর সিএমএইচ হাসপাতালে। ১০দিন পর কুমিল্লা সিএমএইচ এ হস্তান্তর করা হয়। ডাক্তার নাফস ইনজুরির কথা বলেছে। ভালো হতে সময় লাগবে। এখান থেকে দশ দিন পর নিয়ে যাওয়া হয় বাড়িতে। তার বাড়ি মনোহরগঞ্জ উপজেলার মৈশাতুয়া ইউপির চিখুটিয়া গ্রামে। বর্তমানে হাঁটা চলা করতে কষ্ট হয়। স্ট্রেচারে ভর করেই যেতে হয় সামনের দিকে। চিকিৎসার জন্য প্রায় দেড়মাস হাসপাতালের বারান্দায় ঘুরেছেন পরিবারের সদস্যরা। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সামান্য ১০ হাজার টাকা বেতনের চাকরিটুকুও হারিয়ে ফেলেন। বাবা নেই, ৫ ভাইয়ের সংসার আগলে রেখেছেন মা। ছেলের এমন অসুস্থতায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন পরিবারটি। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে দেখেন আকষ্মিক বন্যায় থাকার ঘরে পানি উঠে গেছে। উপায়ান্তর না দেখে আশ্রয় নেন চাচার ঘরে। একদিকে চিকিৎসার খরচ অন্যদিকে সংসার সামলানো, এ নিয়ে নিয়মিত হিমশিম খাচ্ছেন তার পরিবার। অন্যের সাহায্য ছাড়া বর্তমানে একমুহূর্তও চলে না তার। কষ্টের কথাগুলো প্রতিবেদককে এভাবেই বলছিলেন অসুস্থ রাকিব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ডাকে সাড়া দিয়ে সম্প্রতি উপজেলায় এক মতবিনিময় সভায় যোগ দেয়ার কথা জানান ভূক্তভোগী জনি ও রাকিব। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের তালিকা করা হচ্ছে। শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে স্ট্রেচারে ভর করে গুলিবিদ্ধ রাকিব তুলে ধরেন তার মানবেতর জীবন যাপনের কথা। শত বুলেট বুকে ধারণ করে সেখানে যোগ দেন জনি। জানান চিকিৎসার ভার বহন করতে না পারা পরিবারের অসহায়ত্বের কথা। নিজের গাড়িতে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের কুমিল্লা সিএমএইচ হসপিটালে নিয়ে যাওয়াসহ চিকিৎসার সহযোগীতায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজালা রানী চাকমা আহত দুই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানান তারা। সিএমএইচ হসপিটালে জনির থেকে বের করা হয় ৮টি গুলি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজালা রানী চাকমার সাথে কথা হলে তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মনোহরগঞ্জের অনেকেই আহত হওয়ার খবর পাই। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বসে তাদের কথা শুনি। আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ রাকিব ও জনির বক্তব্যে উঠে আসে তারা আহত হওয়ার পর চিকিৎসার ব্যায়ভার বহন করা সহ নানা অসহায়ত্বের কথা। পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে ছুটে যাই তাদের বাড়িতে। পরিবারের সাথে কথা বলে তাদের সুচিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই কুমিল্লা সিএমএইচ হসপিটালে। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় জনির শরীর থেকে ৮টি বুলেট বের করা হয়। এখনো সে শতাধিক বুলেট বহন করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আহত রাকিবের শারীররিক অবস্থাও ভালো নয়। তাদের উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি ধর্নাঢ্য ব্যক্তিদের সহযোগিতার পাশাপাশি প্রশাসনের উধর্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।


আপনার মতামত লিখুন :
More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা