স্টাফ রিপোর্টার
লাকসামের অদম্য মেধাবী মো. শাকিল ইজতিহাদ (সিফাত) শিক্ষা জীবনের সাফল্যের চমক দেখিয়ে চলেছেন। বিশে^র সুনামধন্য মিশর আল আযাহার ইউনির্ভাসিটির প্রতিভাবান এ শিক্ষার্থী ফ্যাকাল্টি অব থিওলজির প্রথম শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক পরীক্ষায় ২য় স্থান অর্জন করেছেন। তার এমন অর্জনে ওই ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। অদম্য মেধাবী মো. শাকিল ইজতিহাদ (সিফাত) লাকসাম উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের সালেপুর গ্রামের মো. কামাল হোসেন ও বেগম সাহিদা কামালের দ্বিতীয় ছেলে।
মো. শাকিল ইজতিহাদ (সিফাত) মিশর আল আযাহার ইউনির্ভাসিটির সদ্য অনুষ্ঠিত ফ্যাকাল্টি অব থিওলজির প্রথম শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক পরীক্ষায় ২য় স্থান অর্জন করেছেন। এমন অর্জনের জন্য তাকে আল আযাহার ইউনির্ভাসিটির সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল ইমামে আকবর আহমদ তায়্যিব শাইখুল আযাহারের স্বাক্ষরিত সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। আল আযাহার ইউনির্ভাসিটির সাবেক প্রধান মুহাম্মদ হোসাইনী মাহরাসাবীর উপস্থাপনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সিফাতের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেন ইউনির্ভাসিটির প্রধান সালাম জুম’আ দাউদ এবং ফ্যাকাল্টি অব থিওলজির প্রধান মাহমুদ মুহাম্মদ হুসাইন।
মো. শাকিল ইজতিহাদ (সিফাত) ছোটবেলা থেকে অদম্য মেধাবী। লেখা-পড়ায় ও নৈতিক চরিত্রে ছিল অনন্য। তিনি ঢাকার কাওরান বাজার আম্বরশাহ আল-ইসলামিয়া মাদ্রাসা থেকে অল্প সময়ের মধ্যে ‘হিফজ’ সম্পন্ন করেন। তিনি ২০১৯ সালে বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা বোর্ড পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধা তালিকায় (সানাবিয়া উলইয়া) তৃতীয় স্থান এবং ২০২১ সালে একই বোর্ডের অধীন গ্রাজুয়েশন (ফজীলত) চতুর্থ স্থান অর্জন করেন। জীবনের প্রতিটি পরীক্ষায় তিনি স্বীয় মেধার স্বাক্ষর রেখে সর্বশেষ মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। সিফাত এর স্বপ্ন ছিল বিশে^র সুনামধন্য মিশর আল আযাহার ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করার। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার মনের আশা পূরণ করেছেন। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি ফ্যাকাল্টি অব থিওলজির পড়ার সুযোগ পেয়ে ২০২৩ সালে মিশর গমন করেন। সেখানে ভর্তি হওয়ার পর তিনি একটি সংস্থা কর্তৃক কোরআন তেলাওয়াতে প্রথম স্থান অধিকার সহ একের পর এক মেধার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন।
মো. শাকিল ইজতিহাদ (সিফাত) এর বাবা মুহাম্মদ কামাল হোসেন দেশের সুনামধন্য রপ্তানী শিল্প প্রতিষ্ঠান ‘মামটেক্স’ এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। কামাল হোসেন অত্যন্ত সহজ-সরল ও ভর্মভীরু। তিন ছেলে সন্তানকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি আন্তরিক চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
মো. শাকিল ইজতিহাদ (সিফাত) নানা একই উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের ভাকড্ডা বাইন্নাপাড়া নিবাসী আলহাজ¦ মুহাম্মদ জুনাব আলী ইরুয়াইন আবদুল বারী জেহাদিয়া মাদ্রাসার সুনামধন্য শিক্ষক ও ভাকড্ডা হাইস্কুল সংলগ্ন মসজিদের খতিব ছিলেন। তিনি এলাকার সমাজিক ও ধর্মীয় কাজের সাথে তিনি জড়িত ছিলেন। জীবদ্দশায় তিনি অসংখ্য মৃত ব্যক্তিকে গোসল করিয়েছেন। চলতি বছরের ২৮ মার্চ ১২০ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন।
মো. শাকিল ইজতিহাদ (সিফাত) এর বড় ভাই মো. ইতমাম হোসেন (সিয়াম) আমেরিকায় মেরিন অফিসার এবং ছোট ভাই মো. শহরিয়ার ত্বহা (শিহাব) ঢাকা কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে অনার্স সম্পন্ন করেছেন।
সিফাতের বাবা মুহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, আমার আদরের সন্তান মো. শাকিল ইজতিহাদ (সিফাত) বিশে^র সুনামধন্য মিশর আল আযাহার ইউনির্ভাসিটিতে অধ্যয়ন করার সুযোগ পাওয়ায় আমি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রতি শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। সিফাত সদ্য অনুষ্ঠিত ফ্যাকাল্টি অব থিওলজির প্রথম শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক পরীক্ষায় ২য় স্থান অর্জন করেছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দয়ায় সে এমন ফলাফল অর্জন করায় আমরা আনন্দিত। সফলভাবে শিক্ষা জীবন সম্পন্ন করে মো. শাকিল ইজতিহাদ (সিফাত) যেন দেশ বরেণ্য একজন ইসলামিক স্কলার হতে পারেন এজন্য সকলের দোয়া প্রত্যাশা করছি।