নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের ঘোড়াময়দান-মানিকমুড়া-ভোলাইন বাজার সড়কের ঘোড়াময়দান সেতু নির্মাণে মরিচাপরা রড দিয়ে সেতু নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে মরিচা পরা রড এর আগে একবার সরিয়ে নিলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গত সপ্তাহ থেকে আবারো মরিচাপরা রড দিয়ে সেতু নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত দুই বছর থেকে ঘোড়াময়দান সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ায় ভাঙ্গা সেতু দিয়ে ছোট, বড় যানবাহনসহ পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে দুর্ভোগের মধ্যে যাতায়াত করতে হতো। উপজেলা এল জি ই ডি জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুটির নির্মাণ কাজে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্ধ প্রদান করে। সেতু নির্মাণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ গত প্রায় ৮মাস পূর্বে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। দীর্ঘদিন সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকার পর গত সপ্তাহ থেকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গত প্রায় এক মাস পানিতে নিমজ্জিত মরিচাপরা রড দিয়ে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করলে এলাকাবাসী বাধা প্রদান করেন। কিন্তু তারপরও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এলাকাবাসীর বাঁধার মুখে মরিচাপরা রড দিয়ে সেতুর নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ঘোড়াময়দান গ্রামের শাহজাহান বলেন, সেতুটি গত দুই বছর ধরে ভেঙ্গে পড়ায় দূর্ভোগের মধ্যে দিয়ে আমাদের যাতায়াত করতে হয়েছে। সেতুটির নির্মাণ কাজের বরাদ্ধ আসলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী মোরশেদুল আলম চৌধুরীর সাব ঠিকাদার হিসেবে স্থানীয় আবদুর রহিম রনি মরিচাপরা রড দিয়ে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। ঠিকাদারের মিস্ত্রী বলেছে, এ রড দিয়ে কাজ করলে সেতুটি টেকসই হবে না। অথচ ঠিকাদার মরিচপরা রড দিয়ে সেতুর নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া পুরনো সেতুর রড ও কংক্রিট দিয়েও পিলার ও স্ল্যাব তৈরী করা হয়েছে। মরিচাপরা রড এবং পিলার দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করলেও সেতুটি যে কোন মূহুর্তে ধ্বসে পড়তে পারে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুটি নির্মাণে কোন অনিয়ম যাতে না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। ঠিকাদার মরিচাপরা রড দিয়ে সেতুর নির্মাণ কাজের পাঁয়তারা করছে। এছাড়া পুরাতন ভাঙ্গা সেতুর কনক্রীট এবং রড দিয়ে সে ব্লক এবং পিলার তৈরী করেছে। যা সেতুটির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে সেতু নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। আমরা চাই । এ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে অন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে সুন্দরভাবে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়।
ঠিকাদার মোরশেদুল আলম চৌধুরীর বক্তব্য জানতে তার মুঠো ফোনে বার- বার ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ মা করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা এলজিইডি উপ-সহকারি প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, মরিচাপরা রড দিয়ে সেতুর কাজ শুরু করার পূর্বে আমরা ক্যামিকেল দিয়ে রড পরীক্ষা করে দেখবো। যদি রডের ডায়া ঠিক থাকে তাহলে রড দিয়ে কাজ করা যাবে। আর যদি পরীক্ষার পর রডের ডায়া ঠিক না থাকে তাহলে এ রড দিয়ে কোনভাবে কাজ করতে দেওয়া হবে না। এছাড়া পুরাতন সেতুর রড দিয়ে যে পিলার বানানো হয়েছে। এ পিলারগুলো দিয়ে কোনভাবে কাজ করতে দেওয়া হবে না। আমরা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছ।