নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল মালেকের বড় ভাই রেজু হাজারী (৬০) ও তার ছেলে সুমন (৩৫) এর বিরুেেদ্ধ প্রায় ৪৭ লাখ ৪৫ হাজার ৪ শত ১০ আত্মসাৎ এর অভিযোগে গত ৯ অক্টোবর কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছে নাঙ্গলকোট পৌর বাজারের ব্যবসায়ী ডি কে এস এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আনিসুল হক (৫৫)।
আনিসুল হক মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেন, আসামী রেজু হাজারী আমার দূর সম্পর্কের আত্মীয়। নাঙ্গলকোট পৌরসভার তিন নং ওয়ার্ডের কোদালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। আমি সৎভাবেই, বালু, সিমেন্ট, রড ও পাথরের ব্যবসা করে আসছি। ১ নং আসামি আওয়ামী লীগের নেতা এবং নাঙ্গলকোট পৌরসভার ২ বারের মেয়র আব্দুল মালেকের আপন ভাই ও ২ নং আসামী সুমন তার ভাতিজা। যার ফলে ক্ষমতাসীন থাকা অবস্থায় বিভিন্ন বিষয়সহ সরকারি কাজে মারাত্মকভাবে ক্ষমতা প্রদর্শন করতো। ১ নং আসামি রেজু হাজারী আমাকে প্রস্তাব দেয়। জাহাঙ্গীর ও সাদেক প্রফেসরের লাইসেন্সে কিছু রাস্তার কাজ নিয়ে আমি ও সে একসাথে কাজ করবে। আমি ব্যবসায়ী হওয়ায় রাস্তার কাজের যাবতীয় মালামাল সরবরাহ করি। কাজ শেষে মালামালের ব্যয় পরিশোধ করে বাকি লভ্যাংশের টাকা দু’জনে ভাগ করে নিব।
আমি সহজ সরল ভাবে তাকে বিশ্বাস করি এবং পৌরসভার দুটি রাস্তার কাজের যাবতীয় মালামাল সরবরাহ করি। কাজ দুটি হচ্ছে যথাক্রমে মক্রবপুর থেকে লোটাস চত্ত¡র হয়ে নাঙ্গলকোট পশু হাসপাতাল পর্যন্ত। অন্যটি হচ্ছে নাঙ্গলকোট থানা হতে রেল স্টেশনের পশ্চিম পার্শ্ব পর্যন্ত। বিগত ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২ লাখ ৫১ হাজার ৩০০ টাকা। ২০১৭ সালের ৮মে থেকে ২০১৭ সালের ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৯৪০ টাকা এবং ২০১৮ সালের ২৬ জানুয়ারী থেকে ২০১৮ সালের ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ লাখ ১৬ হাজার ১৭০ টাকা। আমি বিবাদী কে দুটি কাজের জন্য মালামাল সাপ্লাই বাবদ তাদেরকে মোট ৩৭ লাখ ৪৫ হাজার ৪১০ টাকা তাকে প্রদান করি।
আসামি পৌরসভা থেকে কাজের টাকা উত্তোলন করে আমার পাওনা টাকা না দিয়ে প্রতারণা করে আত্মসাৎ করে। এছাড়া আমার কাজের লভ্যাংশ বাবদ আনুমানিক ১০ লক্ষ টাকা সহ সর্বমোট ৪৭ লাখ ৪৫ লাখ ৪শ১০ টাকার পুরোটাই বিশ্বাসবঙ্গপূর্বক আত্মসাৎ করে।
বাদী আনিসুল হক জানান, আমি তার নিকট পাওনা টাকা চাইলে আসামি রেজু হাজারী ও তার ছেলে সুমন আমার দোকানে এসে দোকানের ভিতরের ও বাহিরের থাইগ্লোস ভাঙচুর করে এবং আমাকে গালিগালাজ করে। আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে কিল ঘুষি মারে ও গলা টিপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় আমার দোকানের কর্মচারীগণ কোনমতে তাদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করে।
পরে ২০২৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর কতেক সাক্ষী নিয়ে ও দোকানের হিসাবের খাতা নিয়ে বিবাদীর বাড়িতে গেলে রেজু হাজারী ও তার ছেলে সুমন উত্তেজিত হয়ে আমাকে হত্যার হুমকি দেয় এবং পাওনা টাকার কথা অস্বীকার করে। তারা আমার সাথে প্রতারণা করলে আমি কোনভাবেই তাদেরকে মালামাল সরবরাহ করতাম না। যার ফলে আমি পাওনা টাকা পাওয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। এতদিন আমি তাদের ক্ষমতার ভয়ে আদালতে মামলা করার সাহস পাইনি। আমি আশা করি আদালত ন্যায় বিচার করে আমার পাওনা টাকা উদ্ধার করতে সহযোগিতা করবে।