নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি
ন্যায্যমূল্যের (ওএমএস) ৮বস্তা চাউল জব্দ করেছে বলে দাবি করেন উপজেলার ঢালুয়া বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ঢালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন ভবন থেকে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বোঝাই করে চাউল নিয়ে যাওয়ার সময় ঢালুয়া-নাঙ্গলকোট সড়কে ঢালুয়া গ্রামের পঁচা মিয়ার ছেলে ফকির মিয়া নামে এক চালককে আটক করলে তিনি দাবি করেন চাউল গুলো একই গ্রামের হুমায়ুন কবির খোকনের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এ ব্যাপারে বুধবার সকালে স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও এলাকাবাসী ঢালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করে।
অটোরিকশা চালককে চাউল-সহ আটক করা ঢালুয়া ইউনিয়ন যুবদল নেতা আলমগীর হোসেন ও ছাত্রদল নেতা ওসমান গনি বাবু বলেন, রাত ১২টার দিকে পুরাতন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অটোরিকশায় বস্তায় করে কিছু নিয়ে যাচ্ছে সন্দেহ হওয়ায় আমরা চালককে দাঁড়াতে সংকেত দিলে সে দ্রুত চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। এতে আমাদের সন্দেহ আরো বেড়ে যাওয়ায় তাকে দৌড়ে গিয়ে থামিয়ে বস্তা খুলে দেখি সরকারি ন্যায্য মূল্যের চাউল নিয়ে যাচ্ছে। চাউল গুলো কোথায় নিচ্ছে জানতে চাইলে অটো চালক ফকির মিয়া বলে টিসিবি ডিলার খোকনের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। পরে আমরা বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করলে তাদের পরামর্শে জব্দকৃত চাউল গুলো নতুন ইউনিয়ন পরিষদে জমা রাখি।
ঢালুয়া ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মমিন ও উপজেলা ছাত্রদল নেতা আমীর হামজা মুন্না বলেন, অনেক দিন পাহারা দেয়ার পর পুরাতন ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের গোডাউন থেকে চাউল নিয়ে যাওয়ার সময় অটোরিকশা আটক করে ছাত্রদল ও যুবদল নেতাকর্মীরা। এ সময় অটোরিকশা চালক দাবি করেছে চাউল গুলো টিসিবি ডিলার খোকনের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার ও তাদের লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানাই।
অভিযুক্ত হুমায়ুন কবির খোকন বলেন, আমি ঢালুয়া ইউনিয়ন টিসিবি ডিলার। গতরাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-সহ বিভিন্ন ভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে আমি ন্যায্যমূল্যের (ওএমএস) চাউল বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি। ঢালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন ভবনে টিসিবি এবং ওএমএস মালামালের গোডাউন হিসেবে ব্যবহার হয়। চাউল নিয়ে যাওয়ার খবর শুনে ওএমএস ডিলার, ট্যাগ অফিসার, ও ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে নিয়ে এসে মালামাল হিসাব করে দেখেছে তাদের কোন মালামাল হারানো যায়নি। তাছাড়া প্রয়োজনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসে টিসিবি’র মালামাল গুলোর স্টক মিলিয়ে দেখা হোক জনগণের মালামাল ঠিক আছে কিনা। প্রকৃত পক্ষে আমার নিকট থেকে টিসিবি ডিলার নিয়ে যেতেই ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে এমন নাটক সাজানো হয়েছে এবং অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
ওএমএস ডিলার ইলিয়াস মিয়া শাহীন বলেন, আমি স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ট্যাগ অফিসারকে সাথে নিয়ে গোডাউনে মাল গুলো হিসাব করে দেখেছি আমার কোন চাউল চুরি হয়নি। আমরা আজকে মালামাল ন্যায্য দামে কার্ডধারীদের কাছে বিক্রি করেছি।
ঢালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অহিদুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি অবহিত হয়ে ওএমএস ডিলার, ট্যাগ অফিসার ও স্থানীয়রা-সহ চাউলের স্টক মিলিয়ে দেখেছি কোন মালামাল হারানো যায়নি।
ঢালুয়া ইউনিয়ন ওএমএস ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা উপণ্ডসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ হামিদুল হক বলেন, এ ব্যাপারে খবর পেয়ে সকালে গোডাউনে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মালের স্টক মিলানো হয়েছে আমাদের মালামাল ঠিক আছে, কোন মালামাল চুরি হয়নি।
এ ব্যাপারে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, বিষয়টি আমাকে কয়েক জন মৌখিক ভাবে জানিয়েছে, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।